এবার আয় থাক আর না থাক, ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা কর দিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হতে পারে আগামী বাজেটে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এতথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি ৩৮ ধরনের সেবা নিতে আয়কর রিটার্নের টোকেন জমা দিতে হবে। এই টোকেন সংগ্রহ করতে হলে করযোগ্য আয় থাক আর না থাক, ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা কর দিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।
এদিকে আগামী ১ জুন ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। সেখানে এই প্রস্তাব দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। কারণ, আয়কর অধ্যাদেশের সঙ্গে বিষয়টি সাংঘর্ষিক হবে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্দেশ্য থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ালে বিপুলসংখ্যক করদাতা করজাল থেকে বেরিয়ে যাবেন। এ সব আয়কর রিটার্নদাতাকে করজালের মধ্যে রাখার লক্ষ্য থেকে সরকারি-বেসরকারি এসব সেবা নিতে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) মানুষের সংখ্যা ৭৪ লাখ ২৪ হাজার ৩৯৭। এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন দেন ২৬ লাখের মতো মানুষ। টিআইএন-ধারীরা আয়কর রিটার্ন জমা দিলে সরকারের বাড়তি ৭-৮শ কোটি টাকা রাজস্ব যোগ হবে। আয়কর যোগ্য মানুষের সংখ্যাও বাড়বে। ৩৮ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা নিতে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার এটাও অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
এনবিআর সূত্র জানায়, নতুন প্রস্তাব পাস হলে করমুক্ত আয়সীমার নিচে আয় থাকলেও নির্ধারিত সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে সব সেবাগ্রহীতাকেই ন্যূনতম কর দিতে হবে। এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ৩৮ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা যারা গ্রহণ করেন, তাদের আয় করমুক্ত আয়সীমার বেশি বলে ধরে নিয়েই নতুন এই ব্যবস্থা চালুর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
আগামী অর্থবছর থেকে করমুক্ত আয়সীমা বার্ষিক তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সেবা নিতে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।